fbpx

Upwork এ সফল ফ্রীল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার উপায়…

বর্তমান বিশ্বে এবং বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস হচ্ছে আপওয়ার্ক। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ওডেস্ক এবং ইল্যান্স এক হয়ে আপওয়ার্ক নামে পরিচিত হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই মার্কেট ফ্রীলান্সার এবং ক্লাইন্টকে সমান গুরুত্ব দেয়া এবং যুগ উপযোগী পরিবর্তন এবং সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এখনো নিজেদের জনপ্রিয় তার শীর্ষে ধরে রেখেছে। 

তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ক্লাইন্টদের জন্য আপওয়ার্ক যতটা সহজলভ্য নতুন ফ্রীলান্সারদের কাছে স্কিল ভেদে এটা সোনার হরিণের মত। এবং স্কিল ভেদে যে ভাগ্যবানরা এখানে কাজের সুযোগ পায় তাদের মধ্যে অনেকই আপওয়ার্কের কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা সম্পর্কে অজ্ঞ এবং সঠিক দক্ষতার অভাবে আপওয়ার্ক থেকে বাংলাদেশের জন্য অনেক দুর্নাম অর্জন করেছেন এবং মার্কেট থেকে বিতারিত হচ্ছেন। যার ফলে অনেক প্রফেশনাল এবং দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের মার্কেটপ্লেসে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে।

তাই ফ্রিল্যান্স গুরু’র আপওয়ার্ক এর সম্পূর্ণ গাইডলাইনের দুইটি পর্ব (আপওয়ার্কে স্বাগতম এবং আপওয়ার্ক নেক্সট লেভেল) আপনাদের সঠিক ধারনা পেতে সাহায্য করবে। 

“আপওয়ার্ক যোগ্যদের সম্পদ আর অযোগ্যদের দুঃস্বপ্ন”

এনামুল হোসাইন আতিক- আপওয়ার্ক টপ রেটেড প্লাস ফ্রীলান্সার

সে ধরনের কাজের চাহিদা আপওয়ার্কে বেশিঃ 

১. মেশিন লার্নিং

২. অটোমেশন

৩. ডাটা এনালিটিক্স স্কিলস

৪. মোবাইল এপ্লিকেশন স্কিলস

৫. ভি আর (ভার্চুয়াল রিয়ালিটি) স্কিলস

৬. ভিডিও প্রোডাকশন

৭. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

৮. প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট

এছাড়া পুরাতন বেশিরভাগ ফ্রিলান্সাররা গ্রাফিক্স ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, ওয়েব এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, রাইটিং ও ট্রান্সলেশন এই গুলো নিয়ে কাজ করে থাকেন এই স্কিলে আপওয়ার্কে নতুন ফ্রিলান্সারদের চাহিদা কিছুটা কম।

আপওয়ার্কে প্রোফাইল তৈরি :

আপওয়ার্কে কাজের জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমে আপওয়ার্কে একটি আপ্রুভ অ্যাকাউন্ট লাগবে। যার জন্য আপওয়ার্কের চাহিদা অনুযায়ী এক বা একাদিক স্কিলে দক্ষ হতে হবে।  তার পর একটা ইমেইল এড্রেস এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে আপ্রুভালের জন্য। অ্যাকাউন্ট করার সময় সাইনআপ ফর্মে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হয়। 

অ্যাকাউন্ট আপ্রুভ হয়ে গেলে  নিজের প্রোফাইলকে নিজের স্কিল অনুযায়ী প্রফেশনালভাবে সাজাতে হবে।

অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো হলোঃ

১. অন্যকে আকৃষ্ট করতে পারে এমন প্রোফাইল পিকচার এবং টাইটেল

২. ইউনিক এবং তথ্য বহুল বাইয়ো/ডেসক্রিপশন

৩. আকর্ষণীয় পোর্টফোলিও (কম পক্ষে ১০ টা)

৪. কোন সনদপত্র থাকলে যুক্ত করতে হবে

৫. আপওয়ার্কের কমিউনিটি কিছু দিন সময় দিয়ে রেডইনেস্ট টেস্ট দিতে হবে।

৬. নিজের দক্ষতা অনুযায়ী স্কিল যুক্ত করতে হবে।

৭. মেইল এবং ফোন ইত্যাদি দিয়ে শতভাগ প্রোফাইল কমপ্লিট করতে হবে।

আপওয়ার্কে কিভাবে কাজ হয়? 

আওয়ারলি কাজঃ একটা কাজের জন্য নির্দিষ্ট টাইম থাকবে এবং সেই টাইমের মধ্যে আপনাকে কাজ শেষ করতে হবে।

উদাহরণঃ ক্লাইন্ট এর একটা অ্যাপ ডিজাইন করা দরকার এবং এর জন্য ক্লায়েন্ট ১০ ঘণ্টা সময়  দিবে, এর মধ্যে আপনাকে কাজটি করে দিতে হবে, এবং এই সময় আপওয়ার্কের ডেক্সটপ অ্যাপ দিয়ে আপনার কাজ পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রতি ১০ অথবা  ২০ মিনিট পর পর ক্লাইন্টকে  স্ক্রীনশট পাঠাবে। এবং কাজ শেষে আপনার ওয়ার্ক ডায়েরি অনুযায়ী ক্লাইন্ট পেমেন্ট অথবা ডিসপিউট করবে।

ফিক্সড প্রাইসের কাজঃ একটা কাজের জন্য নির্দিষ্ট একটি অথবা একাধিক প্রাইস থাকবে।

উদাহরণঃ ক্লাইন্ট এর একটা অ্যাপ ডিজাইন করা দরকার এবং এর জন্য ক্লায়েন্ট এর বাজেট ১০০০ ডলার। তো সে এখন সম্পূর্ণ ডলার ই মাইলস্টোন করতে পারেন বা কাজের বিভিন্ন পর্যায়ভেদে মাইলস্টোন করতে পারেন এবং কাজ শেষে মাইলস্টোন অ্যাপ্রুভ অথবা ডিসপিউট করতে পারে।

আপওয়ার্কে কাজের জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয় :

My Feed অথবা Find Work এ আপনার যুক্ত করা স্কিল অনুযায়ী কাজ খুঁজে পাবেন।কাঙ্খিত কাজটি  ভালভাবে করে পড়ে দেখুন, আপনার পক্ষে করা সম্ভব কিনা বুঝুন।

কাজটির ধরন কি? ঘন্টাভিত্তিক হলে লিখা থাকবে আওয়ারলি, ফিক্সড হলে লেখা থাকবে ফিক্সড। তারপর থাকে কতদিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে, কাজটি কবে পোস্ট হয়েছে, ক্লায়েন্ট এর বাজেট কেমন। কোন জব পোস্ট হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে বিড করলে কাজ পাওয়ার সুযোগ বেশি।

১) আপওয়ার্কে কাজের জন্য আবেদন করাটাকে বিড বলা হয়। এ জন্য আপনার ফ্রী অথবা কেনা কানেক্ট থাকতে হবে।তাই শুধু শুধু বিড করে  আপনার কানেক্ট নস্ট করে কোন লাভ নেই। আন সাক্সেফুল বিড অনেক বেশি হয়ে গেলে অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হতে পারে।

২)  যে কাজটির জন্য বিড করবেন, সেটার বর্ণনা ভালভাবে পড়ে বুঝেনিন। যে কাজে বেশি বিড হয়নি, সেগুলোতে বিড করবেন, কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর বেড়ে যাবে। 

৩) বিড করার সময় অন্যরা কেমন প্রাইজে বিড করছে সেটা দেখে, নিজে একটা স্ট্রাটেজি তৈরি করে বিড করুন।  (এর জন্য আপনার ১৪.৯৯ ডলার দিয়ে প্লাস মেম্বারসিপ কিনতে হবে।)

৩) খুব বেশি অনলাইনে থাকার চেষ্টা করুন, যাতে ক্লায়েন্ট আপনাকে মেসেজ অথবা ইনভাইট দিলে সেটার উত্তর দিতে দেরি না হয়।

৪) বিড করার আগে অবশ্যই ক্লায়েন্টের প্রোফাইল চেক করে নিবেন। ক্লায়েন্টের প্রোফাইল চেক করার সময় যে যে বিষয় গুলো লক্ষ্য করবেন:

–   ক্লায়েন্ট এখন পর্যন্ত কত ঘন্টা কাজ করিয়েছে।

–   হাইয়ারিং রেট (৭৫% উপরে হতে হবে)

–   ক্লায়েন্টের পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড কিনা।

– যে ধরনের কাজে বিড করছেন,  সে ধরনের কাজ ক্লায়েন্ট আগে করিয়ে থাকলে সেটা কত রেটে করা হয়েছে, সেটা খেয়াল করবেন।  সে অনুযায়ী বিড করবেন। বিড করার জন্য কভার লেটার লাগবে।

–   ক্লায়েন্ট এর নাম লোকেশন এবং সময়

এই পর্বে এটুকুই, সামনের পর্বে থাকছে দারুন কিছু সিক্রেট যেটা নতুন পুরাতন সকলের জন্য মহা গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন,

এনামুল হোসাইন আতিক

আপওয়ার্ক টপ রেটেড প্লাস ফ্রীলান্সার

যা থাকছে সামনের পর্বেঃ কভার লেটার লিখার নিয়ম এবং সিক্রেট, কভার লেটারের গঠন স্টেপ বাই স্টেপ, ক্লায়েন্ট এর ইনবক্স বা ইনভাইট কে কিভাবে অর্ডার বানাবো এবং আরও অনেক তথ্যবহুল একটা পর্ব।

আপনার যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত ফ্রিল্যান্স গুরুকে জানাতে ভুলবেন না।

যোগাযোগ করুনঃ

Mobile: 0174 037 0323

Email: Contact@freelanceguru.net

FACEBOOK YOUTUBE

Write your comment Here


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.